22 August 2007

ব্লগিং করুন এবং বিনামূল্যে ব্লগের ভিজিটর বাড়ান


ইন্টারনেটে নিজের মত প্রকাশের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ওয়েব লগ বা সংক্ষেপে “ব্লগ”। ব্লগে আপনি প্রতিদিনের দিনলিপি, বন্ধু-বান্ধবদের উদ্দেশ্যে মেসেজ, ছবি, অডিও, ভিডিও, কোন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনসহ সকল প্রকার ব্যাক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক এবং বানিজ্যিক ওয়েবসাইটের সকল সুবিধা ব্যাবহার করতে পারেন। তাই একে ব্যাক্তিগত বা বানিজ্যিক যেকোন ভাবে ব্যাবহার করা যায়। পূর্বে এই কাজগুলি করতে ওয়েবপেজ তৈরী করতে হতো। এর জন্য দরকার হতো ওয়েব প্রোগ্রামিং সম্বন্ধে জ্ঞান এবং নিয়মিত পুরো ওয়েবপেজের আপডেট। কিন্তু ব্লগ বদলে দিয়েছে সবকিছু। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সম্বন্ধে যার নূন্যতম জ্ঞান আছে সেই ব্যাক্তিও ব্লগিং করতে পারে। ব্লগিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো কোন কিছু জানতে বা জানাতে ব্লগার (যে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্লগ) কে ঘটা করে ই-মেইল করার দরকার নেই। আপনি ব্লগের কমেন্টস্‌ এর ঘরে প্রয়োজনীয় মেসেজ বা নির্দেশ দিতে পারেন। তবে আপনার কমেন্টস্‌ যেহেতু ঐ ব্লগের ভিজিটকৃত সকল ভিজিটররা ইচ্ছা করলে দেখতে পারবে তাই একান্ত ব্যাক্তিগত বা গোপনীয় কোন বিষয়ে কমেন্টস্‌ না লেখাই ভালো।


বর্তমানে সব বিখ্যাত ওয়েবপোর্টাল যেমনঃ গুগল এর ব্লগার, ইয়াহু এর ৩৬০, এমএসএন/লাইভ এর লাইভস্পেস ইত্যাদি সহ প্রায় সকল ওয়েবপোর্টাল সম্পুর্ন বিনামূল্যে ব্লগ তৈরী করার সুবিধা দিচ্ছে। ইংরেজী ব্লগের পাশাপাশি বেশ কিছু বাংলা ব্লগপোর্টালও ইদানিং বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সামহয়্যার ইন ব্লগ, সচলায়তন, এভারগ্রীন বাংলা, প্যাঁচালি ইত্যাদি। বিষয়ের বিভিন্নতার কারনে ব্লগেরও রয়েছে নানা রকম ফের। যেমনঃ ব্যাক্তিগত ব্লগ, বানিজ্যিক ব্লগ, ট্রাভেল ব্লগ, ফটো ব্লগ, ভিডিও ব্লগ ইত্যাদি।


আপনার ব্লগ তৈরী হলেই আপনি চাইবেন সেটা অন্যে দেখুক। তাই আপনার ব্লগে কতজন ভিজিটর আসবে সেটা একটি গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার। এর উপর নির্ভর করছে সেই ব্লগের জনপ্রিয়তা। সাধারনত আমরা কোন সার্চ ইঞ্জিনে ব্লগের লিংক সাবমিট করে ঐ ব্লগের ভিজিটর বাড়ানোর চেষ্টা করি। এতে সার্চ ইঞ্জিনের সার্চকৃত শব্দের সাথে আপনার ব্লগের ডিসিক্রিপশন বা মেটা ট্যাগ এর শব্দ মিলে গেলে ঐ সার্চ ইঞ্জিনে যেকোন পাতায় আপনি আপনার ব্লগ এড্ড্রেস দেখতে পাবেন। কিন্তু বেশি ভাগ ক্ষেত্রে এটিকে বিনামূল্যে পাওয়া সম্ভব হয় না। আবার অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও টেকনিক্যাল কারনে (ক্রেডিট কার্ড বা পে-প্যালের মাধ্যমে টাকা পাঠানো) সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে একটি ব্যাপার বলে রাখা ভাল যে, হয়তো আপনি প্রতিদিন একশ নতুন ভিজিটর পাবেন। কিন্তু তারা কি পূনরায় আপনার ব্লগ ভিজিট করবে? পুরনো ভিজিটরের আপনার ব্লগে পূনরায় ভিজিট করা কে আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা প্রমান করে। আসুন দেখা যাক কিভাবে বিনামূল্যে আপনার ব্লগের ভিজিটর এবং জনপ্রিয়তা বাড়াবেন।


[*] আপনি যখন অন্যের ব্লগ ভিজিট করবেন, ভাল-মন্দ যা-ই মনে আসে তা-ই কমেন্ট করুন। আপনি ঐ একই ব্লগ পোর্টালের ব্লগার হলে এবং লগইন করা থাকলে আপনার নিক এর নিচে আন্ডারলাইন হয়ে আপনার ব্লগ এড্ড্রেস (url) দেখাবে। অন্য সাইটের ব্লগার হলে নাম এর পর অবশ্যই আপনার ব্লগ এড্ড্রেস (url) রেখে আসবেন। এতে ঐ ব্লগার এবং কমেন্ট দর্শনকারীরা অনেকেই আপনার ব্লগ ভিজিট করবে।


[*] দৈনন্দিন জীবনের নিত্য নতুন বিষয় নিয়ে লিখুন। লেখার মধ্যে বৈচিত্র রাখুন। চিন্তা করে দেখুন আপনার আশেপাশের মানুষ কী নিয়ে ভাবছে। অন্যান্য ব্লগ ভিজিট করেও আপনার চিন্তার খোরাক যোগাতে পারেন। অনেক সময় দেখবেন কোন ব্লগার লিখেছেন মাত্র এক/দুই লাইন কিন্তু কমেন্টস্‌ পেয়েছেন তিরিশ/চল্লিশেরও বেশি। আবার কেউ অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় আর্টিকেল লিখেও কোন কমেন্টস্‌ পায়নি। এই সবই হয় লেখার বিষয় এবং বৈচিত্রের কারনে।


[*] বিভিন্ন ফোরামে অংশগ্রহন করুন। অনেকেই ছদ্মনামে ব্লগিং করে। ঐ নামেই হয়তো তারা জনপ্রিয়। কিন্তু নিজেকে তুলে ধরুন। বিভিন্ন ফোরামে উপস্থাপন করুন আপনার লেখার বিষয়। ফোরামের সদস্যদের ভাল লাগলে তারাও নিয়মিত আপনার ব্লগ ভিজিট করবে।


[*] আপনার ব্লগ বিভিন্ন ওয়েব ডাইরেক্টরিতে সাবমিট করুন। অনেকে বিনামূল্যে এই সুবিধা দেয়। ঐ সব ডাইরেক্টরিতে রেজিস্ট্রেশন করুন। আপনার ব্লগ কোন ক্যাটাগরীতে পরে তা ঠিক করুন। তাদের ছোট্ট বাটন আকারের বিজ্ঞাপন আপনার ব্লগের কোথাও বসিয়ে (পেস্ট করে) আপনার ব্লগ এড্ড্রেস (url) তাদের সাথে বিনিময় করুন। এতে তারা আপনার ব্লগ কে কোন সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট করবে।


[*] ব্লগ নিয়মিত আপডেট করুন বা নতুন কিছু লেখুন। অনিয়মিত যেন নিয়মিত না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। কোন কারনে কিছুদিন লিখতে না পারলে নতুন লেখায় ধারনা দিন ঐ সময়ে কি করেছেন। তাহলে পাঠক এটাকে স্বাভাবিক ভাবে নেবে।


[*] লিখুন আপনি নিজে কিভাবে ব্লগিং করছেন। কিভাবে শুরু করলেন, পপুলার হলেন, ভিজিটর বাড়ালেন সব খোলা খুলি লিখুন। ব্লগিং এ সবার অধিকার সমান। আপনার লেখায় অন্যকে ব্লগিং এ উৎসাহী করুন এবং পরামর্শ দিন।


[*] নতুন কিছু জানলে বা ব্রেকিং নিউজ পেলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার ব্লগে পোস্ট করুন।


[*] ব্লগে কোন প্রতিযোগিতা রাখতে পারেন। আপনি কোন প্রশ্ন করবেন এবং কমেন্টস এর ঘরে ভিজিটিররা উত্তর দিবে। সময় বেঁধে দিবেন। যার সঠিক উত্তর আগে পাবেন সেই প্রথম। প্রশ্নগুলো মজার হলে সবাই অংশগ্রহনে উৎসাহ পাবে।


[*] খুবই ভাল মানের লেখার চেয়ে প্রত্যেক লেখার একই মান ধরে রাখুন। তাহলে ঐ মানসিকতা সম্পন্ন সকল পাঠক নিয়মিত আপনার ব্লগ ভিজিট করবে।


[*] ব্লগের নতুন পোস্টের লেবেল/ট্যাগে ঐ লেখা সম্পর্কিত শব্দ ব্যাবহার করতে ভুলবেন না।


[*] অনেক ওয়েবসাইটে বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন (Free classified) দেওয়া যায়। সেই সব ওয়েবসাইটে আপনার ব্লগের এড্ড্রেস (url) দিয়ে বিজ্ঞাপন দিন।


[*] ইন্টারনেট ব্যাবহার করে এমন পরিচিত সবাইকে ই-মেইলের মাধ্যমে আপনার ব্লগের কথা জানান এবং এড্ড্রেস (url) দিন।


[*] ব্লগে কাউকে হেয় করবেন না। কোন ব্যাক্তি, দেশ, জাতি, ধর্ম নিয়ে কোন আপত্তিজনক লেখা এবং পোস্ট করবেন না।


[*] চেনা পরিচিত সবার সম্মানসূচক প্রশংসা, কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ প্রকাশ করে ব্লগে পোস্ট করুন। বিভিন্ন বিশেষ দিনে (জন্মদিন বা ম্যারেজ ডে) ব্যাক্তিগত ভাবে প্রত্যেক কে আলাদা করে অভিনন্দন জানান। দেখবেন তারা নিজেরা আপনার ব্লগ দেখবে, তাদের সম্পর্কে আপনার প্রশংসা অন্যকে দেখাবে এবং তাদের চেনা জানা অন্যদেরও দেখতে বলবে। তারা সবাই পরোক্ষভাবে আপনার ব্লগ প্রচারের ভুমিকা রাখবে।


[*] ব্লগ কে আকর্ষনীয় রাখতে সবসময় পোস্টের লিখিত বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ছবি দিতে ভুলবেন না। ছবি সহ ব্লগ, ছবিহীন এর চেয়ে অনেক বৈচিত্রপূর্ন।


ব্লগ আপনার মন মানসিকতার প্রতিচ্ছ্ববি। ব্লগ দেখেই বোঝা যাবে আপনি কী চিন্তা করছেন। তাই ব্লগ কে পরিচ্ছন্ন এবং সুস্থ রাখুন।

20 August 2007

কিভাবে আত্মজীবনী লিখবেন


বাস্তব জীবনে প্রত্যেক মানুষ নানা ঘটনার সম্মুখীন হয়। তার কোনটা ভাল আর কোনটা খারাপ। জীবন কখনও একঘেয়ে ক্লান্ত আবার কখনও রোমাঞ্চকর সুখময়। প্রত্যেক মানুষ চায় তার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা অন্যে জানুক এবং ব্যাক্তি জীবনে প্রয়োগ করুক। আবার অনেকের জীবন এতই ঘটনাবহুল যে অন্যে জেনে সহজেই আকৃষ্ট হয়।
বেশিভাগ আত্মজীবনী শেষ বয়সে লেখা হয়। এতে একসাথে জীবনের প্রায় সব অভিজ্ঞতা তুলে ধরা যায়। আবার অনেকে কম বয়সেই শুরু করেন। তারা জীবনের প্রতিটি ধাপের আভিজ্ঞতা একের পর এক লিখে যায়। আসুন দেখা যাক কিভাবে আত্মজীবনী লেখা যায়।

[*] জীবনের শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা নিন। যেমনঃ শৈশব, কৈশর, তারুন্য, যুবাকাল, বিবাহিত জীবন, পরিবার-সন্তান, চাকুরী/কর্মজীবন,পরিবারের পূর্ণতা (সন্তানদের বিয়ে এবং তাদের সন্তানলাভ), বন্ধু-বান্ধব, জীবনসাথী, প্রত্যাশা-প্রাপ্তি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বাস্তবজীবন থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।

[*] বাস্তব জীবন থেকে পাওয়া ভাল আভিজ্ঞতাগুলি বিশদ বর্ননা করুন যাতে সবাই সেটা নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে পারে।

[*] বাস্তব জীবন থেকে পাওয়া খারাপ আভিজ্ঞতাও বিশদ বর্ননা করুন যাতে অন্য কেউ সেটার পুনরাবৃত্তি আর না করে।

[*] কোন ব্যাক্তির সাথে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার বর্ননায় ঐ ব্যাক্তির সম্পর্কে যত কম তথ্য জানাবেন ততই ভালো।

[*] আপনার আশে পাশের মানুষদের নিয়ে মন্তব্য করতে সতর্ক থাকুন। কাউকে হেয় করবেন না।

[*] কারো সম্পর্কে আক্রমনাত্মক বা উস্কানিমূলক কিছু লিখবেন না।

[*] বেশিভাগ সময় জীবনের ভালো দিক তুলে ধরার চেষ্টা করবেন।

[*] আত্মজীবনীর শেষে, জীবনের চলার পথে ক্ষনিকের জন্য হলেও যদি কারো মাধ্যমে ভালো অভিজ্ঞতা বা খারাপ পরিস্থিতির সম্মূখীন হন অথবা তারা আপনার মাধ্যমে, তবে তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা এবং ক্ষমা করে দিতে এবং চাইতে ভুলবেন না। এতে সবার কাছে আপনি উদারমনা, মহানুভব, দয়ালু এবং একজন ব্যাক্তিত্তবান ব্যক্তি হিসেবে স্মরনীয় থাকবেন।

19 August 2007

সংবাদপত্রের জন্য ইন্টারভিউ নেবার টিপস


[*] সবচেয়ে ভাল হয় ইন্টারভিউ “ইন্টারভিউ না হয়ে” শুধুমাত্র আলাপ হলে। এতে করে যার ইন্টারভিউ নেবেন তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। এটিকে একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে কারো সাথে আলাপ করার পর্যায়ে নিলে প্রশ্নকর্তা এবং উত্তরকারী উভয়ের সুবিধা হয়। তবে এই আলাপ থেকেই ইন্টারভিউকারীকে মূল বিষয়কে ছেঁকে বের করে আনতে হবে।

[*] পূর্ণ প্রস্তুতি না নিয়ে ইন্টারভিউ নিতে যাবেন না। যার কাছে যে বিষয় নিয়ে ইন্টারভিউ নিতে যাবেন, আগে সেই ব্যাক্তি এবং বিষয় সম্পর্কে ভালভাবে তথ্য জানুন। একটি মোটামুটি ধারনা নিন। বিষয়টি যদি ঐতিহাসিক হয় তবে ঐ বিষয়ের এখনকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারনা নিন।

[*] ব্যাক্তি এবং বিষয় বুঝে ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন তৈরী করুন। প্রথমেই যন্ত্রের মত প্রশ্ন শুরু করবেন না। অথবা একটার মূল উত্তর পেয়ে গেলেই পরেরটায় যাবেন না। শুরু করুন গল্পের ছলে। জেরা করার ভঙ্গিতে নয়। প্রশ্নের মূল উত্তর দেওয়ার পরেও যদি উত্তরদাতা কথা চালিয়ে যায় তবে শুনুন এবং তার কথা শেষ হলে নতুন প্রশ্ন করুন। প্রশ্নের উত্তর আপনার ব্যাক্তিগত মতামতের বিরুদ্ধে হলেও নিজের মতামত উত্তরদাতার উপর চাপিয়ে দিবেন না। তাকে সম্মান করুন এবং তার দৃষ্টিকোন থেকেই লিখুন বা প্রকাশ করুন

[*] যার কাছে ইন্টারভিউ এর জন্য যাবেন তাকে আগে থেকেই বলে রাখুন। তিনি যে সময় দিবেন ঠিক ঐ সময়েই সাক্ষ্যাৎ করুন। কাজের মাঝখানে বিনা নোটিশে কারো কাছে গেলে উভয়েই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন।

[*] ইন্টারভিউকারী কে অবশ্যই পরিপাটি, মার্জিত এবং পরিস্থিতি বুঝে সঠিক পোষাক পরতে হবে। যে কোন অফিস কার্য্যালয়ে গেলে অবশ্যই আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফর্মাল পোষাক প্যান্ট-শার্ট, স্যুট-টাই পরতে হবে। পহেলা বৈশাখ, ঈদ বা মেলায় ইন্টারভিউ নিতে গেলে পাঞ্জাবী-পায়জামা বা ফতুয়া পরতে পারেন। এছাড়া উন্মুক্তস্থান, হাট-বাজার, ট্যুরিস্টস্পট, সী-বীচে ইন্টারভিউ এর ক্ষেত্রে টি-শার্ট, গেঞ্জী বা আরামদায়ক ক্যাজুয়াল পোষাক পরতে পারেন।

[*] প্রত্যেকটি ইন্টারভিউ এ অবশ্যই যে তিনটি জিনিস সঙ্গে নেবেন তা হলো কলম/পেন্সিল, নোট নেওয়ার জন্য কাগজ এবং যেকোন পরিস্থিতিতে উত্তর বের করার মানসিকতা। এছাড়া আনুসাঙ্গিক হিসাবে রেকর্ডার, ক্যামেরা এবং সাহায্যকারী কাউকে নিতে পারেন।

[*] আলাপকারীর কাছে প্রথমেই নিজের পরিচয় দিন। কি কারনে, কোন পত্রিকা/মিডিয়া হতে এবং ইন্টারভিউ ঐ মিডিয়ার কোন অংশে প্রকাশ হবে তাও জানান। এতে উত্তর পাওয়া অনেক সহজ হবে।

18 August 2007

হাইকু কবিতা


জাপানী ভাষায় হাইকু লেখার ধরন সহজ। কিন্তু অন্য ভাষার জন্য ঐ নিয়ম সামান্য ভিন্ন। বিদেশী ভাষায় হাইকু লেখার ধরন সম্বন্ধে একেক জনের একেক রকম মতামত। আসুন এই কবিতা লেখার প্রাথমিক ধরন নিয়ে আলোচনা করি।


হাইকু’র বিষয়ঃ যেকোন কিছু হাইকু কবিতার বিষয় হতে পারে। সাধারন মানুষের অজানা এবং উপলব্ধির বাইরের বিষয়ে হাইকু খুব কমই আছে। কিছু দুর্দান্ত কবিতায় দৈনন্দিন জীবনের ঘটনা এমন আকর্ষনীয় এবং সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে পাঠকরা সহজেই চমৎকৃত হবেন।


হাইকুর ছন্দঃ হাইকু কবিতা হয় তিন লাইনে এবং প্রত্যেক লাইনে থাকে পাঁচ, সাত এবং পাঁচটি করে শব্দ। প্রথম থেকে তৃতীয় লাইন পর্যন্ত যথাক্রমে পাঁচ, সাত এবং পাঁচটির বেশি শব্দ থাকা চলবেনা। তবে কম শব্দ হলেও চলে।


ভাষার ভিন্নতা, ব্যাকরন এবং বৈচিত্রের কারনে হাইকু একেক দেশে একেক রকম করে লেখা হয়। সঠিক বিন্যাসে সতেরটি শব্দের মধ্যে মাত্র তিন লাইনের হাইকু কবিতা হতে পারে খুবই বৈচিত্রময়।


স্বরচিত হাইকু

১.
মোমের শিখার উথ্বাল নাচের পানে
তাকিয়ে থাকি অবাক চোখে আমার আমি
উত্তর জানে প্রশ্নের আমার অন্তর্যামী।

২.
চোখগুলো তার কাল মেঘের মতো
ইচ্ছে করে তাকিয়ে থাকি সারা জীবন
না পেয়ে হৃদয় মাঝে ক্ষত।

৩.
অনেক আশায় বেঁধেছিলাম তাসের ঘর
সেই ঘরেতে থাকব দুজন ভূবন করে আলো
গুড়িয়ে দিল উথ্বাল পাথ্বাল ঝড়।

17 August 2007

ফ্রীল্যান্স সাংবাদিক বা লেখকদের জন্য টিপস


[*] আপনি পেশাদার লেখক না কিন্তু যেকোন বিষয় নিয়ে লিখতে চান।

[*] এই ধরনের লেখাকে আয়ের মূল উৎস হিসেবে নেবেন না।

[*] আপনি হবেন একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক বা লেখক। কবি, সাহিত্যিক বা চিত্রনাট্য লেখক নয়।

[*] পড়ার অভ্যাস, লেখার ধরন, ব্যাকরন, বানান, কম্পিউটার এবং ছোটখাট গ্রাফিক্স এডিটিং সফটওয়্যার সম্বন্ধে প্রাথমিক জ্ঞান থাকতে হবে।

দক্ষতা বাড়ানোর উপায়ঃ

[*] যেকোন ধরনের সংবাদপত্র, ম্যাগাজীন এবং বই পড়ুন। পড়ে জানতে চেষ্টা করুন লেখার ধরন।

[*] লেখুন, লেখুন এবং লেখুন। প্রতিদিন সময় করে লিখুন। শুরুতে একটা সস্তা বাচ্চাদের ছোট (A4 এর অর্ধেক) সাইজের লাইন টানা (বাংলা লেখার খাতা) খাতা কিনুন। প্রতিদিন এক পৃষ্ঠা করে লিখুন। লেখা হতে পারে যে কোন বিষয়ে। নিজেকে নিয়ে, বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জন, পরিবার, পোষা জন্তু, যেকোন প্রিয় এবং অপ্রিয় বিষয়ে লিখুন। চিঠি বা ডায়রী আকারে নয়। লিখুন সংবাদপত্রে প্রকাশ করার ভঙ্গীতে। খাতাটা যেহেতু আপনার ব্যাক্তিগত তাই কোন কিছু আসম্পূর্ন করে লিখবেন না। সমালোচকের ভূমিকায় লিখুন।

[*] সুযোগ পেলেই অন্যের সাথে কথা বলুন। জমিয়ে গল্প করুন বা আড্ডা দিন। প্রায়ই দেখা যায় কোন আড্ডার এক/দুইজন মধ্যমনি থাকে। তারা কথার যাদুতে অন্যদের তাক লাগিয়ে দেয়। তাদের মত করে কথা বলার অভ্যাস করুন। সেভাবে লিখলে পাঠক উপলব্ধি করবে যেন আপনি তাদের সামনেই আছেন।

[*] লেখার শেষ অংশ অসম্পূর্ন রাখবেন না। লেখাটি পুরোপুরি সম্পূর্ন করুন। তাহলে লেখা পূর্নাঙ্গ হবে।

[*] বেশ কয়েকটা সংবাদপত্র বা ম্যাগাজীন কিনে তাদের লেখার স্টাইলের ভিন্নতা বোঝার চেষ্টা করুন। দেখুন পেশাদার সাংবাদিক এবং রিপোর্টাররা কিভাবে সামান্য তিন-চার লাইনের বিষয়কে ব্যাখ্যা বিন্যাস করে দেড়-দুইশো শব্দের প্রবন্ধ বা সংবাদ বানিয়ে ফেলেছে।

[*] একটা বিষয়কে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কয়েকভাবে লেখার চেষ্টা এবং অভ্যাস করুন। একবার ভাল দিক তুলে ধরুন, পরেরবার ঐ একই বিষয়ে খারাপ দিক। এতে আপনার চিন্তা এবং কল্পনাশক্তির পরিধি বাড়বে।

[*] কোন ঘটনা ঘটতে দেখলে পুরো ব্যাপারটা ভালভাবে মনে রাখুন। কাগজ কলম থাকলে নোট নিন। ক্যামেরা বা রেকর্ড প্লেয়ার থাকলে অনুমতি নিয়ে ব্যাবহার করুন। তৈরী করুন রিপোর্ট বা নিদেন পক্ষে মাত্র একশত শব্দের প্যারাগ্রাফ।

[*] যেহেতু এটি আপনার মূল পেশা নয়, তাই সবাইকে/সর্বক্ষেত্রে নিজেকে সাংবাদিক (ফ্রীল্যান্স হোক বা না হোক) পরিচয় দিলে মূল ঘটনা নাও জানা যেতে পারে। বন্ধু, সমঝদার শ্রোতা, সাহায্যকারী বা সমব্যাথী হয়ে মূল ঘটনা জানার চেষ্টা করুন।

কাজে সাফল্য আনুন


এই দিন দিন নয় আরো দিন আছে, এই দিনকে নেব আমরা সেই দিনেরও কাছে। গানের এই কথাটা শুনতে ভাল লাগলেও সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। যে সময় চলে যাচ্ছে সে সময়ে আমরা কী করছি? সব দিনেই কি আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারছি?

আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই অনেক অসফল দিন আছে। কিন্তু সব দিনই অসফল হবে এমন কথা নেই। আসুন জানি কীভাবে দিনের সব কাজে সফলতা আসবে। দেরী না করে শুরু করি আজ থেকেই।

[*] এটি খুবই গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার যে আপনি সারাদিন কি কি করবেন। সারাদিনের কাজের তালিকা তৈরী করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন এবং কঠিন কাজটি তালিকার শুরুতে লিখুন। পর্যায়ক্রমে সহজ এবং সহজতর। দিনের শুরুতেই কঠিন কাজটি করে ফেললে আপনি থাকবেন টেনশান মুক্ত এবং পরের কাজগুলো করা সহজ হবে। সহজ কাজগুলি আগে করে ফেললে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। কঠিন কাজ করা আরো কঠিন হবে।

[*] দিনের শুরুতে কী করবেন তার একটি রুটিন করে নিন। কথায় আছে “সব ভাল যার শেষ ভাল”। কিন্তু শুরু ভাল না হলে শেষ ভাল হতে চায়না। সকালটা হবে আপনার একেবারে নিজস্ব। সারাদিনের কাজের তালিকা আপনি সকালেই তৈরী করতে পারেন। সকালে হালকা ব্যায়াম, পুষ্টিকর নাস্তা, প্রাকৃতিক দৃশ্য, মেডিটেশন, নামায/ প্রার্থনা আপনাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রাণদ্দীপ্ত করবে। পাবেন সারাদিনের কর্মদ্দিপনা এবং যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আত্মবিশ্বাস।

[*] যেকোন কাজের মূললক্ষ্য নির্ধারন করা খুবই গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার। আজকে যে কাজ করবেন ভবিষ্যতে তার ফলাফল কিভাবে পেতে চান তা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। বড় কোন লক্ষ্য অর্জন করতে ঐ কাজটিকে ছোট কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিন। এতে কাজ সহজ হবে।

[*] যখন একা থাকবেন নিজেকে নাম ধরে ডেকে প্রশ্ন করুন। মনে মনে নয়। স্বাভাবিক গলায়। প্রশ্ন করুন আপনার দুর্বলতা সম্বন্ধে। ভয় পাবেন না, লজ্জা পাবেন না বা এড়িয়ে যাবেন না। আপনার গোপন দুর্বলতার ব্যাপারে হয়তো কেউ জানেনা বা লক্ষ্য করেনি। কিন্তু আপনি নিজেকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করান এবং উত্তর খুজুন। নিয়মিত প্রশ্ন করতে থাকলে একদিন ঠিকই উত্তর পেয়ে যাবেন। ফিরে পাবেন আত্মবিশ্বাস।

[*] যখন আপনি কোন কিছু করবেন তখন কাজে মনযোগ দিন। রেডিও-টেলিভিশন চালু থাকলে বন্ধ করুন বা ভলিয়্যুম কমিয়ে দিন। টেলিফোন মিউট করে দিন। আশে পাশে কেউ থাকলে কাজের কথা বলে তাদেরকে ডাকাডাকি বা বিরক্ত করতে নিষেধ করুন। কোন গুরুত্বপূর্ন কাজে বা ইন্টারভিউ এ যাবার পথে পরিচিতজনের সাথে সাক্ষাৎ হলে কুশলাদি বিনিময় সংক্ষিপ্ত করে মূল কাজে রওনা দিন। পথিমধ্যে এমন সাক্ষাৎ অনেক সময় কাজে ব্যাঘাত ঘটায়।

[*] দিনকে দুইভাগে ভাগ করে নিন। সকাল থেকে দুপুর এবং দুপুর থেকে বিকাল। আফিস টাইম নয়টা-পাঁচটা হিসেবেও দুই ভাগে ভাগ করতে পারেন। কঠিন এবং জটিল কাজ দিনের প্রথমার্ধে এবং অপেক্ষাকৃত সহজগুলো দিনের দ্বিতীয়ার্ধে করুন। বিকেল এবং সন্ধ্যা রাখুন নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের জন্য। মনে রাখবেন, আপনার চারপাশের সবাই আপনার কাজের প্রেরনা।

[*] নিজের কাজে কোন ত্রু টি হলে তার দোষ অন্য কোন ব্যাক্তি বা বস্তুর উপর চাপাবেন না। অন্যের কাছ থেকে ততটুকুই আশা করুন যতটুকু তাকে আপনি নিজে দিতে পারবেন। অন্যের কারনে যদিও আপনার কাজে ভুলত্রু টি হয় তবে তার ফল কিন্তু আপনাকেই বহন করতে হবে। তাই কাজের ত্রু টি বের করে দ্রুত সমাধানের পথ খুজুন।

[*] প্রত্যেক কাজ শেষ করবেন খুব ভাল ভাবে। যেন দীর্ঘসূত্রতা না থাকে। আগামীকালও আপনাকে কাজ করতে হবে। কাজের লেজুড় থাকলে আগামীর কাজ ব্যাহত হবে। কোন কাজ শুরু করলে সেটা শেষ করে ছাড়ুন। খুব সুন্দরভাবে কাজ সম্পন্ন করুন এবং আগামীকালের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকুন।

[*] দিনের শেষে পর্যালোচনা করে দেখুন কি কি কাজ করতে চেয়েছিলেন এবং কোনটি কতটুকু সম্পন্ন হয়েছে। মিলিয়ে দেখে নিন আপনার কাজের সাফল্য। কোন কাজে অসফল হলে সেটি অন্যভাবে করার চিন্তা করুন। নিজেকে সম্মান করুন এবং আত্মবিশ্বাসি থাকবেন। দেখবেন আপনার সব কাজে সাফল্য নিশ্চিত।

শেয়ার করুন

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More