এই দিন দিন নয় আরো দিন আছে, এই দিনকে নেব আমরা সেই দিনেরও কাছে। গানের এই কথাটা শুনতে ভাল লাগলেও সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। যে সময় চলে যাচ্ছে সে সময়ে আমরা কী করছি? সব দিনেই কি আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারছি?
আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই অনেক অসফল দিন আছে। কিন্তু সব দিনই অসফল হবে এমন কথা নেই। আসুন জানি কীভাবে দিনের সব কাজে সফলতা আসবে। দেরী না করে শুরু করি আজ থেকেই।
[*] এটি খুবই গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার যে আপনি সারাদিন কি কি করবেন। সারাদিনের কাজের তালিকা তৈরী করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন এবং কঠিন কাজটি তালিকার শুরুতে লিখুন। পর্যায়ক্রমে সহজ এবং সহজতর। দিনের শুরুতেই কঠিন কাজটি করে ফেললে আপনি থাকবেন টেনশান মুক্ত এবং পরের কাজগুলো করা সহজ হবে। সহজ কাজগুলি আগে করে ফেললে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। কঠিন কাজ করা আরো কঠিন হবে।
[*] দিনের শুরুতে কী করবেন তার একটি রুটিন করে নিন। কথায় আছে “সব ভাল যার শেষ ভাল”। কিন্তু শুরু ভাল না হলে শেষ ভাল হতে চায়না। সকালটা হবে আপনার একেবারে নিজস্ব। সারাদিনের কাজের তালিকা আপনি সকালেই তৈরী করতে পারেন। সকালে হালকা ব্যায়াম, পুষ্টিকর নাস্তা, প্রাকৃতিক দৃশ্য, মেডিটেশন, নামায/ প্রার্থনা আপনাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রাণদ্দীপ্ত করবে। পাবেন সারাদিনের কর্মদ্দিপনা এবং যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আত্মবিশ্বাস।
[*] যেকোন কাজের মূললক্ষ্য নির্ধারন করা খুবই গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার। আজকে যে কাজ করবেন ভবিষ্যতে তার ফলাফল কিভাবে পেতে চান তা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। বড় কোন লক্ষ্য অর্জন করতে ঐ কাজটিকে ছোট কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিন। এতে কাজ সহজ হবে।
[*] যখন একা থাকবেন নিজেকে নাম ধরে ডেকে প্রশ্ন করুন। মনে মনে নয়। স্বাভাবিক গলায়। প্রশ্ন করুন আপনার দুর্বলতা সম্বন্ধে। ভয় পাবেন না, লজ্জা পাবেন না বা এড়িয়ে যাবেন না। আপনার গোপন দুর্বলতার ব্যাপারে হয়তো কেউ জানেনা বা লক্ষ্য করেনি। কিন্তু আপনি নিজেকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করান এবং উত্তর খুজুন। নিয়মিত প্রশ্ন করতে থাকলে একদিন ঠিকই উত্তর পেয়ে যাবেন। ফিরে পাবেন আত্মবিশ্বাস।
[*] যখন আপনি কোন কিছু করবেন তখন কাজে মনযোগ দিন। রেডিও-টেলিভিশন চালু থাকলে বন্ধ করুন বা ভলিয়্যুম কমিয়ে দিন। টেলিফোন মিউট করে দিন। আশে পাশে কেউ থাকলে কাজের কথা বলে তাদেরকে ডাকাডাকি বা বিরক্ত করতে নিষেধ করুন। কোন গুরুত্বপূর্ন কাজে বা ইন্টারভিউ এ যাবার পথে পরিচিতজনের সাথে সাক্ষাৎ হলে কুশলাদি বিনিময় সংক্ষিপ্ত করে মূল কাজে রওনা দিন। পথিমধ্যে এমন সাক্ষাৎ অনেক সময় কাজে ব্যাঘাত ঘটায়।
[*] দিনকে দুইভাগে ভাগ করে নিন। সকাল থেকে দুপুর এবং দুপুর থেকে বিকাল। আফিস টাইম নয়টা-পাঁচটা হিসেবেও দুই ভাগে ভাগ করতে পারেন। কঠিন এবং জটিল কাজ দিনের প্রথমার্ধে এবং অপেক্ষাকৃত সহজগুলো দিনের দ্বিতীয়ার্ধে করুন। বিকেল এবং সন্ধ্যা রাখুন নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের জন্য। মনে রাখবেন, আপনার চারপাশের সবাই আপনার কাজের প্রেরনা।
[*] নিজের কাজে কোন ত্রু টি হলে তার দোষ অন্য কোন ব্যাক্তি বা বস্তুর উপর চাপাবেন না। অন্যের কাছ থেকে ততটুকুই আশা করুন যতটুকু তাকে আপনি নিজে দিতে পারবেন। অন্যের কারনে যদিও আপনার কাজে ভুলত্রু টি হয় তবে তার ফল কিন্তু আপনাকেই বহন করতে হবে। তাই কাজের ত্রু টি বের করে দ্রুত সমাধানের পথ খুজুন।
[*] প্রত্যেক কাজ শেষ করবেন খুব ভাল ভাবে। যেন দীর্ঘসূত্রতা না থাকে। আগামীকালও আপনাকে কাজ করতে হবে। কাজের লেজুড় থাকলে আগামীর কাজ ব্যাহত হবে। কোন কাজ শুরু করলে সেটা শেষ করে ছাড়ুন। খুব সুন্দরভাবে কাজ সম্পন্ন করুন এবং আগামীকালের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকুন।
[*] দিনের শেষে পর্যালোচনা করে দেখুন কি কি কাজ করতে চেয়েছিলেন এবং কোনটি কতটুকু সম্পন্ন হয়েছে। মিলিয়ে দেখে নিন আপনার কাজের সাফল্য। কোন কাজে অসফল হলে সেটি অন্যভাবে করার চিন্তা করুন। নিজেকে সম্মান করুন এবং আত্মবিশ্বাসি থাকবেন। দেখবেন আপনার সব কাজে সাফল্য নিশ্চিত।
0 টি মন্তব্য:
Post a Comment